1. live@www.dainikonlinetalaashporbo21.com : news online : news online
  2. info@www.dainikonlinetalaashporbo21.com : দৈনিক অনলাইন তালাশ পর্ব ২১ :
শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ১০:১২ অপরাহ্ন
সর্বশেষ :
মহানগরীতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে বিক্ষোভ প্রত্যয় সৃজনশীল মেধা বৃত্তি পরীক্ষা- ২০২৪ ইং এর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট এ মাননীয় মৎস্য উপদেষ্টার পরিদর্শন নারী প্রতারনা এক কলঙ্কিত নাম ইউসুফ আলী মোল্লা গোল্ডেন সিটি লিও ক্লাবের কমিটি নির্বাচন : সভাপতি ফরিদ সেক্রেটারি বিথী এসএসসি-০৮ এবং এইচএসসি ১০ ব্যাচের বন্ধুদের মিলনমেলা অনুষ্ঠিত চট্টগ্রামে ড্রেনে পড়ে  নিখোঁজ শিশুর মরদেহ পাওয়া গেল  ১৪ ঘণ্টা পর  বম ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উৎসব পালনে সেনাবাহিনীর সহযোগীতা মহেশখালী-কক্সবাজার নৌ-রুটে পরীক্ষামূলক সি ট্রাক চালু পর্নোগ্রাফি মামলায় জয়পুরহাট আ”লীগ নেতার ছেলে গ্রেপ্তার

রাজশাহীর ডেভেলপার মোস্তাফিজের কাবিননামায় বিয়ে করে প্রতারণার অভিযোগ বিরুদ্ধে ভুয়া

রাজশাহী প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ, ২০২৫
  • ২৫ বার পড়া হয়েছে

রাজশাহী প্রতিনিধি

রাজশাহীর গ্রিন প্লাজা রিয়েল এস্টেট কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে এক শিক্ষার্থীকে প্রেমের জালে ফাঁসিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে বিয়ে করার অভিযোগ উঠেছে। ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে বিয়ের পর ওই শিক্ষার্থীর কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে মোস্তাফিজ। মোস্তাফিজ অবিবাহিত পরিচয় দিলেও লোকচক্ষুর আড়ালে তার রয়েছে স্ত্রী। রাজশাহী কলেজের অনার্স পড়ুয়া এক শিক্ষার্থীকে ভুয়া কাবিননামা করে বিয়ে করেছেন তিনি। এছাড়া তার চেয়ে ১৫ বছর বড় এক প্রভাষককে বিয়ে করার গুঞ্জন পুরোনো। ইতিমধ্যে ওই প্রভাষকের সাথে মোস্তাফিজের বেশ কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। তবে প্রতারণা করে বিয়ে করার অভিযোগে মামলা করতে যাচ্ছেন ওই শিক্ষার্থী।

অনুসন্ধানে মোস্তাফিজের পাওয়া গেছে ৯টি ফেসবুক আইডি। এসব ফেসবুক আইডির মধ্যে কিছু আইডি সরাসরি তার নাম দিয়ে ও কিছু আইডি বেনামে। এসব আইডির মধ্যে একটি আইডি মোস্তাফিজের স্ত্রী দাবিদার চাঁদনী নামে শিক্ষার্থী ব্যবহার করছেন। রীতিমত মোস্তাফিজের ছবি ব্যবহার করে ওই ফেসবুক আইডি ব্যবহার করা হচ্ছে।

জানা গেছে, ফেসবুক মেসেঞ্জারের মাধ্যমে ২০১৭ সালের দিকে পরিচায় হয় রাজশাহীর নগরীর ভদ্রা রেলগেট এলাকার জৈনিক ব্যক্তির কলেজ পড়ুয়া মেয়ে চাঁদনীর সাথে। এরপর প্রেম, তারপর ২০২৩ সালে ৮ অক্টোবর তাদের বিয়ে। বিয়ের পর তারা নগরীর ক্যান্টনমেন্ট রোডের একটি ছয়তলা বাড়িতে থাকতেন। তারা দুজনের সম্মতিতেই বাচ্চা নেয়। আবার কৌশলে চাঁদনীর গর্ভে থাকা ৪ মাসের বাচ্চা নষ্ট করে দেয় মোস্তাফিজ। বিয়ের পর মোস্তাফিজ চাঁদনীর কাছ থেকে হাতিয়ে নেন ৯৩ লাখ টাকা। রাজশাহী কলেজে অনার্স ৩য় বর্ষের পড়া চাঁদনী মোস্তাফিজের ভয়ে ঢাকায় রয়েছেন, পড়াশোনাও বন্ধ। পাঠকের জন্য চাঁদনীর সাথে মোবাইলে সাক্ষাতকারের পুরোটা হুবহু তুলে ধরা হলো।

মোস্তাফিজের স্ত্রী দাবি করে চাঁদনি বলেন, সময়টা ২০১৭ সাল। তখন আমি বাইরে পড়াশোনা করতাম। মোস্তাফিজের সাথে আমার ফেসবুকে পরিচয় হয়। মোস্তাফিজ বারবার আমাকে এসএমএস দিতো, কিন্তু আমি রিপলে দিতাম না। পরে সে ফোন দেয়। ফোন দিয়ে নানা কথা বলে। কথাবার্তা থেকে প্রেম। প্রেমের সম্পর্কের পর মোস্তাফিজের পরামশ্যে আমি রাজশাহী কলেজে ভর্তি হই। রাজশাহীতে এসে তার ব্যাপারে অনেক কথা শুনি। আমি তাকে বলি তুমি ভাল হয়ে যাও। তখন মোস্তাফিজ বলে আমি এসব কিছুই করি না। মানুষে কয় তাই। আমিও ভাবলাম বিজনেসের কারণে মানুষ নানান আলোচনা সমালোচনা করতে পারে। ২৩ সালে ৮ অক্টোবরে আমরা বিয়ে করি। দুজনার সম্মতিতে বাচ্চাও নি। সে বলে বাচ্চা নিবা নও, তবে এখন কাউকে কিছু বলার দরকার নাই।

কলেজের প্রভাষকের ব্যাপারে চাঁদনি বলেন, শিক্ষিকার মাথে মোস্তাফিজের ছবি ভাইরাল হওয়ার পর আমি তার কাছে এ বিষয়টি জানতে চাইলে সে বলে তিনি আমার বন্ধবী। মোস্তাফিজ আমাকে বলে তুমি যেটা ভাবছো সেটা না। আমি তোমাকেই ভালবাসি, তোমাকেই ভালবাসবো। তখন আমার পেটে বাবু ছিল। এরপরও সে আমার আইডি ব্লক মারে। ফোন দিলে রিসিভ করে না। আমার সাথে কানেক্টেট ফেসবুক, ম্যাসেঞ্জর, হোয়াটএ্যাপস সব কিছুতে ব্লক। সব কিছুতেই এড়িয়ে যায় মোস্তাফিজ। এতে আমি মানুষিকভাবে অসুস্থ্য হয়ে পড়ায় পেটের বাচ্চা নষ্ট হয়ে যায়। অথচ দুজন মিলে বাচ্চার নাম রেখেছিলাম সিয়াআন রহমান সিফান। বাচ্চা মারা গেছে ২০২৪ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারী দুপুরে।

এক প্রশ্নে জবাবে তিনি বলেন, পেটে যখন এক মাসের বাচ্চা, তখন ডাক্তার বলেছিল, এভাবে টেনশন করলে বাচ্চার ক্ষতি হবে। কিন্তু মোস্তাফিজের ভাইরাল হওয়া ছবি, আমাকে সব জায়গায় ব্লক মারা, আমি মেনে নিতে পারছিলাম না। বাচ্চাটা চার মাসের মাথায় নষ্ট হয় যায়। ওই সময় আমি শিক্ষিকাকে বলেছি, আপনি একজন শিক্ষক হয়ে একজন স্টুডেন্টের সংসার নষ্ট করলেন। তবে শুনেছি ওই শিক্ষিকার মেয়ের সাথে মোস্তাফিজের সম্পর্ক ছিল। শিক্ষিকার মেয়ে বরিশালে ডাক্তারী পড়ে। তবে শিক্ষিকার মেয়ে আমাকে এসএমএসে জানায় মোস্তাফিজের সাথে তার কোনো সম্পর্ক নাই। মোস্তাফিজের সাথে তার মায়ের ভালবাসা, তার সাথে থাকে, হেন তেন।

শিক্ষিকার সাথে কিভাবে মোস্তাফিজের সম্পর্ক হলো জানতে চাইলে তিনি বলেন, মোস্তাফিজের হাজারোটা ফেসবুক আইডি। ওর মোবাইলে যখন হাত দিতাম, তখন মনে হতো, মোবাইল ভেঙে ফেলি। এগুলো বিষয় তাকে বললে তিনি বলে এগুলো কিছুই না।

বিয়ে কি রেজিষ্ট্রি হয়েছিল, এমন প্রশ্নে জবাবে তিনি বলেন, ‘না’। ওটা নিজেদের মধ্যে একটা কাগজ ছিল। মোস্তাফিজ ভুয়া রেজিষ্ট্রি কাগজ তৈরি করে আমাকে বিয়ে করে। আমি বুঝতে পারিনি ওর মনে এগুলো ছিল। তিনি বলেন, বিয়ের বিষয়টি বিশ্বাস না হলে আপনি নিজে প্রমান করে দেখেন। আমি একজন (মোস্তাফিজের) মানুষের ছবি দিয়ে, তার নাম দিয়ে ফেসবুক আইডি চালাচ্ছি। তার সাথে কোনো সম্পর্ক না থাকলে কিছু কইবো না। আমি তার ছবি, তার নাম দিয়ে আইডি খুলে রেখেছি। তারপরও সে আমাকে কিছু বলছে না। তিনি বলেন, রাজশাহী ক্যান্টনমেন্ট রোড়ের একটি বাসায় আমরা থাকতাম। সেখানে খোঁজ নেন, বাড়ির সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখেন। বাড়িআলাকে বলেন ছয়তলায় মোস্তাফিজের সাথে একটা মেয়ে থাকতো। তাদের সম্পর্ক কি ছিল। কারণ বাড়িআলা আমাদের বিয়ের ব্যাপারে জানতো।

চাঁদনী বলেন, আমি যদি মিথ্যে হতাম তাহলে মিডিয়ার সামনে আসতে ভয় পেতাম। মানুষকে কিছু বলার আগে আমারো ভয় লাগতো। আমি বিজনেস করতাম। বিজনেসের সুবাদে আমার টাকা ছিল। বিভিন্ন লোকজন মোস্তাফিজকে খুঁজে বেড়াতো। পাওনাদাররা মোস্তাফিজকে অফিসে না পেয়ে আমাকে ফোন দিতো। মোস্তাফিজকে মারার হুমকি দিতো। আমার একাউন্ট থেকে ৯৩ লাখ টাকা তুলে মোস্তাফিজকে দিয়েছি। এমন কি আমার প্রাইভেট কার বিক্রি করেও তাকে টাকা দিয়েছি। তাকে সব টাকা দেয়ার পর এখন আমি নি:স্ব। আপনি আইনের আশ্রয় নিচ্ছেন না কেনো জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি ছাড় দিয়ে যাচ্ছি। ভাল হওয়ায় সুযোগ দিচ্ছি।

বর্তমান মোস্তাফিজের সাথে আপনার যোগাযোগ আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, মোস্তাফিজ আমার ফোন রিসিভ করে না। সম্প্রতি অন্য একটি ফেসবুক আইডি থেকে নক দিয়ে কয়, আমাদের বিষয়ে কাউকে কিছু কইবা না, চুপচাপ থাকবা। যখন সময় পাবো তখন তোমার লগে কথা কইবো। কপালে থাকলে আপনার আপনি পাবা। এ কথা বলেই আইডি ব্লক মেরে দেয় সে।

চাঁদনী বলেন, মোস্তাফিজ এতো কিছু করার পরও আমি চুপ ছিলাম। অনেকেই তার ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু আমি এখনো কিছু করিনি। তিনি বলেন, মোস্তাফিজ বলে আমাদের আইনগত বিয়েই হয়নি। তাহলে কি এটাকে আইনগত ধর্ষণ বলে ? আমি মোস্তাফিজকে স্বামী দাবি করলে সবাই রেজিষ্ট্রির কাগজ চাইবে। কিন্তু মোস্তাফিজ কৌশলে আমার কাছ থেকে আগেই সব কাগজ নিয়ে নিয়েছে। মোস্তাফিজ আমাকে ধোকা দিয়েছে। ওর নামে আমি ধর্ষণ মামলা দিবো। তিনি বলেন, মোস্তাফিজের জন্য পড়াশোনাও শেষ। পরিবারের কাছেও বোঝা হয়ে আছি। খুব দ্রুতই এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিবো। তার প্রতারণার জবাব সে পাবে। তিনি বলেন, আমি রাজশাহী কলেজের অনার্স ৩য় বর্ষের ছাত্রী। এবছর ফরম ফিলাপ ছিল। কিন্তু মোস্তাফিজের ভয়ে করতে পারিনি। তার ভয়ে আমি ঢাকায় আছি। এদিকে চাঁদনী মোস্তাফিজের সাথে মেসেঞ্জারের চ্যাট, বিয়ে ও প্রেমের বেশ কিছু ডকুমেন্ট উপস্থাপন করেন। যা প্রতিবেদকের কাছে রয়েছে।

এব্যাপারে গ্রিন প্লাজা রিয়েল এস্টেট কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমানের সাথে কথা বলতে তার অফিসে গেলে তিনি প্রতিবেদকের হাত পা ভেঙে দেয়ার হুমকি দেন। বক্তব্য নেয়ার জন্য তার ব্যবহৃত মোবাইলে যোগাযোগ করলে তিনি ব্যস্ততা দেখান। তার হোয়াটসঅ্যাপে চারটি প্রশ্ন করে পাঠানো হয়। তিনি মেসেজ সিন করলেও কোনো উত্তর দেননি।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন
© www.dainikonlinetalaashporbo21.com